০১:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

ইয়েন ইয়েনের দেশবিরোধী প্ল্যাকার্ডে পিসিসিপি’র বিক্ষোভ সমাবেশ পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

বাংলা নববর্ষের শোভাযাত্রায় চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়েন ইয়েনের ‘দেশবিরোধী’ প্ল্যাকার্ড বহনের ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)। সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে শহরের কাঠালতলী এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনরূপা সিএনজি স্টেশনে সমাবেশে মিলিত হয়।

বক্তারা অভিযোগ করেন, নববর্ষের মতো সর্বজনীন উৎসবকে অপব্যবহার করে ইয়েন ইয়েন ও তার অনুসারীরা পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়ানোর অপচেষ্টা চালিয়েছেন। তারা বলেন, “কেএনএফ-এর সন্ত্রাসীদের মুক্তির দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে নেয়া কোনোভাবেই সাধারণ পাহাড়ি জনগণের প্রতিনিধিত্ব নয়, বরং এটি পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।”

বক্তারা আরও বলেন, “বোম জনগোষ্ঠীর নারী-শিশুদের বন্দী দেখানোর মাধ্যমে ইয়েন ইয়েন প্রকৃত সত্য আড়াল করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। অথচ বন্দী রয়েছে কেএনএফ-এর সেইসব সদস্য, যারা ব্যাংক ডাকাতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধে জড়িত।”

সমাবেশে বক্তারা প্রশ্ন তোলেন, “যেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান প্রধান প্রশাসনিক ও উন্নয়নমূলক পদে চাকমা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা রয়েছেন, সেখানে পাহাড়ে ‘সেনা শাসন’ চলছে—এ দাবি কতটা যৌক্তিক?” তারা দাবি করেন, বাস্তবতা হচ্ছে পাহাড়ে সাধারণ জনগণকে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজ ও সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ভয়ে চলতে হয়। বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয় তিন পার্বত্য জেলায়, যার নেতৃত্বে রয়েছে তথাকথিত ‘আন্দোলনকারী’ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো।

বক্তারা বলেন, “আদিবাসী অধিকার” নামে কিছু গোষ্ঠী রাজনৈতিক স্বার্থে পাহাড়কে বারবার অশান্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। পার্বত্য শান্তিচুক্তির মাধ্যমে বহু দাবি পূরণ হলেও নতুন করে ‘আদিবাসী’ পরিচয়ের দাবিতে দেশি-বিদেশি চক্র সক্রিয় হয়েছে বলেও তারা মন্তব্য করেন।
এসময় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো: আলমগীর হোসেন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন পৌর সভাপতি পারভেজ মোশাররফ হোসেন। বক্তব্য দেন পিসিএনপি’র চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান, পিসিসিপি জেলা সাধারণ সম্পাদক মো: খলিলুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, প্রচার সম্পাদক ইসমাঈল গাজী, ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদিকা জান্নাতুল ফেরদৌস বিথী, অর্থ সম্পাদক আরিফুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা ইয়েন ইয়েনকে কেএনএফ-এর পক্ষাবলম্বনের অভিযোগে দ্রুত আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

ইয়েন ইয়েনের দেশবিরোধী প্ল্যাকার্ডে পিসিসিপি’র বিক্ষোভ সমাবেশ পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

ইয়েন ইয়েনের দেশবিরোধী প্ল্যাকার্ডে পিসিসিপি’র বিক্ষোভ সমাবেশ পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

Update Time : ০৬:৩০:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

বাংলা নববর্ষের শোভাযাত্রায় চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়েন ইয়েনের ‘দেশবিরোধী’ প্ল্যাকার্ড বহনের ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)। সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে শহরের কাঠালতলী এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনরূপা সিএনজি স্টেশনে সমাবেশে মিলিত হয়।

বক্তারা অভিযোগ করেন, নববর্ষের মতো সর্বজনীন উৎসবকে অপব্যবহার করে ইয়েন ইয়েন ও তার অনুসারীরা পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়ানোর অপচেষ্টা চালিয়েছেন। তারা বলেন, “কেএনএফ-এর সন্ত্রাসীদের মুক্তির দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে নেয়া কোনোভাবেই সাধারণ পাহাড়ি জনগণের প্রতিনিধিত্ব নয়, বরং এটি পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।”

বক্তারা আরও বলেন, “বোম জনগোষ্ঠীর নারী-শিশুদের বন্দী দেখানোর মাধ্যমে ইয়েন ইয়েন প্রকৃত সত্য আড়াল করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। অথচ বন্দী রয়েছে কেএনএফ-এর সেইসব সদস্য, যারা ব্যাংক ডাকাতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধে জড়িত।”

সমাবেশে বক্তারা প্রশ্ন তোলেন, “যেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান প্রধান প্রশাসনিক ও উন্নয়নমূলক পদে চাকমা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা রয়েছেন, সেখানে পাহাড়ে ‘সেনা শাসন’ চলছে—এ দাবি কতটা যৌক্তিক?” তারা দাবি করেন, বাস্তবতা হচ্ছে পাহাড়ে সাধারণ জনগণকে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজ ও সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ভয়ে চলতে হয়। বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয় তিন পার্বত্য জেলায়, যার নেতৃত্বে রয়েছে তথাকথিত ‘আন্দোলনকারী’ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো।

বক্তারা বলেন, “আদিবাসী অধিকার” নামে কিছু গোষ্ঠী রাজনৈতিক স্বার্থে পাহাড়কে বারবার অশান্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। পার্বত্য শান্তিচুক্তির মাধ্যমে বহু দাবি পূরণ হলেও নতুন করে ‘আদিবাসী’ পরিচয়ের দাবিতে দেশি-বিদেশি চক্র সক্রিয় হয়েছে বলেও তারা মন্তব্য করেন।
এসময় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো: আলমগীর হোসেন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন পৌর সভাপতি পারভেজ মোশাররফ হোসেন। বক্তব্য দেন পিসিএনপি’র চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান, পিসিসিপি জেলা সাধারণ সম্পাদক মো: খলিলুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, প্রচার সম্পাদক ইসমাঈল গাজী, ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদিকা জান্নাতুল ফেরদৌস বিথী, অর্থ সম্পাদক আরিফুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা ইয়েন ইয়েনকে কেএনএফ-এর পক্ষাবলম্বনের অভিযোগে দ্রুত আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান।